Tution centre – কিভাবে শুরু করবেন,কি সমস্যা আসতে পারে, পড়ানোর সময়, পড়ানোর মাধ্যম, ফিস, খরচ ও লাভ । সমস্ত তথ্য জানুন বিস্তারিত ।

tution centre, tution fees

আজকাল শিক্ষার উপর অনেক জোর দেওয়া হচ্ছে। অভিভাবকরাও তাদের সন্তানদের শিক্ষার জন্য বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে। ভালো স্কুল বা টিউশন খোঁজ করা অভিভাবকদের কাছে একটি কঠিন বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমতাবস্থায় হোম টিউশন শিক্ষিত যুবকদের ইনকামের একটি ভালো উৎস হতে পারে। আপনি চাইলে পড়াশোনার পাশাপাশি হোম টিউশনিও ( tution centre ) করতে পারেন।

আজকাল মানুষ এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যে বাবা-মা তাদের সন্তানদের পড়াশোনায় সময় দিতে পারছে না। তাই একজন ভালো টিউশন শিক্ষকের সন্ধান করে থেকে । তাই আপনি যদি শিক্ষিত হন এবং টাকা উপার্জন এর জন্য হোম টিউশন ( tuition at home ) করতে চান, তাহলে আপনিও শুরু করতে পারেন হোম টিউশন । আপনি একজন স্টুডেন্ট হন বা নাই হোন এই মাধ্যমে মোটামুটি একটা ইনকাম করতে পারবেন।

👉 কিভাবে হোম টিউশন শুরু করবেন

আপনি যদি প্রায় দশম বা দ্বাদশ পাস করে থাকেন। তাহলে নিজের বাড়িতে টিউশনি পড়ানোর ( tuition at home ) কাজ শুরু করতে পারেন এবং আশেপাশের ছোট বাচ্চাদের পড়াতে পারেন।

আর আপনি যদি গ্রাজুয়েট বা মাস্টার ডিগ্রী কমপ্লিট করে থাকেন। তাহলে নিচু ক্লাসের বাচ্চাদের পড়ানোর পাশাপাশি আপনি যে বিষয়ে দক্ষ সেই বিষয়ের উঁচু ক্লাসের শিক্ষার্থীদের কেউ পড়াতে পারেন।

👉 হোম টিউশনে কি কি সমস্যা আসতে পারে

টিউশনি পড়ানো ( tution centre ) খুব ভালো জিনিস কিন্তু যাদেরকে আপনি পড়াবেন তাদের রেজাল্ট যদি ভাল হয় তাহলে হয়তো খুবই ভালো। আর যদি তাদের রেজাল্ট আগের থেকেও খারাপ হয়ে থাকে। তাহলে হয়তো সে সমস্ত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছে আপনাকে হয়তো জবাবও দিতে হতে পারে। তাই পড়ানোর সময় খুব ভালোভাবে পড়াতে হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা মোটামুটি একটা ভালো রেজাল্ট করতে পারে।

তাছাড়া সময় সময়ে সিলেবাস পরিবর্তন হয়ে থাকে। তাই হয়তো অনেক সময় অনেক জিনিসই অজানা থাকতে পারে। তাই আপনাকে ওই সমস্ত বিষয়গুলি আগে নিজে থেকে রিসার্চ করে জেনে, সঠিক পদ্ধতিতে সঠিক শিক্ষা তাদেরকে দিতে হবে।

প্রত্যেকটি ক্লাসের জন্যই মাতৃভাষায় পড়াশোনার পাশাপাশি মাঝেমধ্যে দুই একটা করে ইংরেজি ওয়ার্ডও ব্যাবহার হলে শিক্ষার্থীরা যদি তার মানে জানতে চাই এবং আপনি যদি তা না জানেন তাহলে আপনাকে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। তবে আপনি বলতে পারেন যে কালকে জেনে বলে দেবো। অথবা চাইলে আপনারা সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে সাহায্য করে নিতে পারেন গুগল ট্রান্সলেটের সাহায্যে।

👉 প্রতিদিন পোড়ানোর সময় এবং ব্যাচ সংখ্যা

প্রত্যেকটি ব্যাচ পিছু কমপক্ষে আপনাকে দু’ঘণ্টা করে ব্যয় করতে হবে। তাই সেই হিসাব যদি করা যায় আপনি যদি নিজে একজন স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন এবং এখনো নিজের পড়াশোনার কাজ চালাচ্ছেন। তাহলে আপনি সকালে এবং সন্ধ্যায় দুইটি ব্যাচ আরামের সহিত পড়াতে পারবেন। আর যদি আপনার পড়াশুনো কমপ্লিট হয়ে গিয়ে থাকে। তাহলে দৈনিক আপনি আরামের সহিত চার টা ব্যাচ পড়াতে পারবেন।

👉 পড়ানোর জায়গার সৌন্দর্য বজায়

আপনার যদি টাকা থাকে তাহলে আপনি আপনার বাড়ির টিউশনকে ( tution centre ) একটু স্পেশাল লুক দিতে পারেন। আপনি যদি ছোট শিশুদের শেখান, তাহলে বর্ণ কার্ড ও সংখ্যা কার্ড রাখুন, দেওয়াল পেইন্টিংগুলিও একটু রঙিন বর্ণমালার মুদ্রণ রাখা ভালো।

আপনি যদি একটু বড় বাচ্চাদের পড়ান তাহলে গণিতের সূত্র বা বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত যেগুলি যেমন- মানুষের মস্তিষ্ক বা শরীরের ছবি ইত্যাদি ব্যবহার করতে। এছাড়া একটি বিশ্বের মানচিত্রও রাখতে পারেন।

👉 পড়ানোর মাধ্যম

বাড়িতে টিউশন ( tution centre ) করে বাচ্চাদের পড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের খেলনা, চিত্র বা পড়ার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিভিন্ন ধরনের কার্টুন ভিডিও বাচ্চাদেরকে দেখাতে পারেন। এতে বাচ্চারা আকৃষ্ট হবে এবং আপনাকে পছন্দ করবে। আর পছন্দ করা মানেই বাচ্চারা আপনার কথা শুনবে এবং পড়াশোনা করবে।

ক্লাসের ছাত্রদেরকে পড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষা সহায়ক উপকরণ ব্যবহার করবেন। তাদের মোবাইল নাম্বারগুলি নিয়ে একটি whatsapp গ্রুপও ক্লাস ওয়াইজ তৈরি করতে পারেন। তাতে শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন জিনিস মাঝেমধ্যে আলোচনা করতে পারেন বা টিচিং মেটেরিয়ালস শেয়ার করতে পারেন।

👉 অনলাইন টিউশন

আপনার যদি কোন একটি সাবজেক্টে বিশেষ দক্ষতা থেকে থাকে। তাহলে আপনি ওই সাবজেক্টের টপিক ওয়াইজ ভিডিও টিউটোরিয়াল তৈরি করে ইউটিউব, ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে একাউন্ট তৈরি করে শেয়ার করতে পারেন। এতে আপনার প্রচার হবে সঙ্গে ওই সমস্ত প্ল্যাটফর্ম গুলির অ্যাড নেটওয়ার্ক এ একাউন্ট তৈরি করেও ইনকাম করতে পারবেন। এই পদ্ধতি ফলো করে অনেকে মাসে হাজার হাজার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। যা আপনারা অবশ্যই জানেন।

👉 সব সাবজেক্ট পড়ানোর জন্য করণীয়

বাচ্চাদের কে পড়ানোর জন্য আপনার হয়তো প্রত্যেকটি সাবজেক্টে খুব বেশি দক্ষ হওয়ার প্রয়োজন হবে না। কিন্তু যখন আপনি উঁচু ক্লাসের ছাত্রদের সব সাবজেক্ট পড়াতে যাবেন তা আপনি হয়তো এত সহজে পারবেন না। কেননা একেক জন ব্যক্তি একটি সাবজেক্টেই সবথেকে বেশি পাণ্ডিত্য অর্জন করে থাকে। যদিও অনেকে পাস কোর্সের সাবজেক্ট গুলিতে কিছুটা দক্ষতা অর্জন করে, কিন্তু সেগুলিতে সম্পূর্ণভাবে দক্ষ থাকে না।

তাই আপনার টিউশনের উঁচু ক্লাসের ছাত্রদের প্রত্যেকটি সাবজেক্ট পড়ানোর জন্য, প্রতিটি সাবজেক্ট এর জন্য একেক জন করে ওই সাবজেক্টে দক্ষ ব্যক্তিদের কে নিযুক্ত করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে ওই সমস্ত ব্যক্তিদের কে মাসিক একটা বেতন দিতে হবে।

কিন্তু এই ক্ষেত্রে তখনই আপনি মনোযোগ দেবেন যখন আপনার কাছে উঁচু ক্লাসের অনেক ছাত্র থাকবে। এবং প্রত্যেকটি সাবজেক্ট যখন আপনার টিউশনি পড়ানোর সিদ্ধান্ত নিবেন।

👉 টিউশন ফিস লিস্ট

টিউশন ফিস ( tution fees ) নির্ধারণের সময় আপনাকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে, যে আপনি টিউশনটি কোথায় করাচ্ছেন গ্রামীণ এলাকা না শহরাঞ্চল। গ্রামীন এলাকা হয়ে থাকলে প্রতিটি সাবজেক্ট এর ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে কম ফিস রাখতে হবে, সেই জায়গায় শহরাঞ্চল হলে আপনারা সাবজেক্ট পিছু ফিস বেশি রাখতে পারেন।

দ্বিতীয়তঃ সাইন্স অর্থাৎ বিজ্ঞান বিভাগের সাবজেক্ট গুলির জন্য ফিস বেশি রাখতে পারেন। সেই জায়গায় আর্টস অর্থাৎ কলা বিভাগের সাবজেক্ট গুলির জন্য ফিস ( tution fees ) আপনাকে তুলনামূলক কম রাখতে হবে।

তাছাড়া আপনার ওই এলাকায় যে সাবজেক্ট এর চাহিদা বেশি সেই সাবজেক্টের ফ্রিজ তুলনামূলক আপনি অন্যান্য সাবজেক্ট এর তুলনায় একটু বেশি রাখতে পারেন। নিম্নে ফিসের লিস্ট ( tution fees list ) উল্লেখ করা হল –

গ্রামীণ অঞ্চলের ক্ষেত্রে ফিস ( tution fees )

সাবজেক্ট বিভাগ ফিজ
গ্রামীণ অঞ্চলে কলা বিভাগ বা আর্টস বিভাগের সাবজেক্ট এর জন্য – প্রতিমাস ২৫০-৩৫০ ( ৮ বা বেশি স্টুডেন্টস থাকলে।
– প্রতিমাসে ১০০০-১৫০০ ( ১-২ জন্য থাকলে )
গ্রামীণ অঞ্চলে সাইন্স বা বিজ্ঞান বিভাগের সাবজেক্ট এর জন্য– প্রতিমাস ৩০০-৩৫০ ( ৮ বা বেশি স্টুডেন্টস থাকলে।
– প্রতিমাসে ১৫০০-২০০০ ( ১-২ জন্য থাকলে )

শহর অঞ্চলের ক্ষেত্রে ফিস ( tution fees )

সাবজেক্ট বিভাগ ফিজ
শহর অঞ্চলে কলা বিভাগ বা আর্টস বিভাগের সাবজেক্ট এর জন্য – প্রতিমাস ৩৫০-৪০০ ( ৮ বা বেশি স্টুডেন্টস থাকলে।
– প্রতিমাসে ১৫০০-২০০০ ( ১-২ জন্য থাকলে )
শহর অঞ্চলে সাইন্স বা বিজ্ঞান বিভাগের সাবজেক্ট এর জন্য– প্রতিমাস ৪০০-৪৫০ ( ৮ বা বেশি স্টুডেন্টস থাকলে।
– প্রতিমাসে ২০০০-২৫০০ ( ১-২ জন্য থাকলে )

👉 টিউশনের স্থান

আপনার যদি বাড়িতে পর্যাপ্ত জায়গা থাকে সেখানেতেও আপনি টিউশন করতে পারেন। বা অন্যের বাড়িতে বাড়িতে গিয়েও টিউশন করতে পারেন। অথবা স্কুল, কলেজ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশেপাশেও আপনি পর্যাপ্ত জায়গা ভাড়া নিয়ে সেখানে কেউ টিউশন করাতে পারেন।

তবে একটা বিষয় অবশ্যই মনে রাখবেন, যেই জায়গাটি সকলের জন্য গ্রহণযোগ্য, অর্থাৎ কোনরকম বাধা ছাড়াই সকলেই পৌঁছাতে পারবে এবং খুব বেশি কোলাহলপূর্ণ জায়গা যেন না হয়। ওই ধরনের স্থান নির্বাচন করবেন।

👉 প্রচারের জন্য করণীয়

আপনি যদি নিজের বাড়িতে টিউশনটি শুরু করেন। তাহলে কমপক্ষে দুই একজন নিয়ে শুরু করবেন, তাহলে অনেকেই দেখবেন আপনার টিউশন করানো দেখে তার সন্তানদেরকে টিউশনে ভর্তি করবে। অথবা আপনি কয়েকজনকে নিজে থেকেও বলতে পারেন, যে আমি বাড়িতে টিউশন করব। যদি কেউ পাড়ার থেকে তাহলে জানাবে।

দ্বিতীয়ত, আপনি যদি একটি টিউশন সেন্টার খুলতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনাকে আপনার ওই টিউশন সেন্টারে একটি নাম রাখতে হবে। সঙ্গে পোস্টার বা হ্যান্ডবিল ছাড়িয়ে বিতরণ করতে পারেন।

তৃতীয়ত, অনেকেই অনলাইনে সার্চ করে থাকে যে তার নিকটবর্তী টিউশন সেন্টার ( tuition centre near me ) কোথায় রয়েছে। যাতে করে তারা বা তাদের সন্তানদেরকে তাদের নিকটবর্তী টিউশন সেন্টারে ( tuition classes near me ) পাঠাতে পারে। তাই আপনাকে অবশ্যই আপনার টিউশন সেন্টার টিকে google ম্যাপে সাবমিট করতে হবে। যাতে করে তারা যদি সার্চ করে তাদের নিকটবর্তী টিউশন সেন্টার ( tuition centre near me ) কোথায় রয়েছে যেন তারা খুব সহজেই পেয়ে যায়। যদি আপনি বাড়িতেও করে থাকেন তাহলে বাড়ির এড্রেসটিকেউ গুগল ম্যাপে সাবমিট করতে পারেন। এক্ষেত্রে কেউ যদি সার্চ করে তার নিকটবর্তী টিউশন প্লাস কোথায় রয়েছে( home tuition near me ), তাহলে তাকে আপনার বাড়ির এড্রেসটি শো করিয়ে দেবে।

👉 হোম টিউশনে কত বিনিয়োগ করতে হবে

আপনি যদি আপনার বাড়ি থেকে আপনার হোম টিউশন ( tution centre ) শুরু করেন, তাহলে এর জন্য আপনাকে খুব বেশি পরিমাণ বিনিয়োগ করার দরকার নেই। আপনার একটি মাত্র রুম লাগবে।যেটি আপনার বাড়িতে থাকবে।

এছাড়াও, আপনার শুধু ব্ল্যাকবোর্ড চক, ডাস্টার, একটি চেয়ার ও অন্যান্য কিছু প্রয়োজনীয় থাকতে হবে। যা আপনি সহজেই সব কিছু ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায় পেয়ে যাবেন । পরবর্তীতে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী স্থান পরিবর্তন করতে পারেন ও আরো নিত্য প্রয়োজনীয় উন্নতমানের জিনিস রাখতে পারেন।

👉 হোম টিউশন থেকে আয়

এক্ষেত্রে আপনার আয় নির্ভর করবে যে আপনি কত টাইম, কতজন স্টুডেন্ট কে পড়াচ্ছেন। আপনি যদি একজন নিজের স্টুডেন্ট হন অর্থাৎ নিজে পড়াশুনার পাশাপাশি দুই টাইম ১০ জন শিক্ষার্থীদের কে পড়ান টিউশন খুলে ( tution centre ) । এবং তাদের কাছে যদি কমপক্ষে ২৫০ টাকা করে নেন। তাহলে এক টাইমের জন্য প্রতি মাসে ২৫০×১০ = ২৫০০ টাকা। এবং দুই টাইম পড়ানোর জন্য ২৫০০×২= ৫০০০ টাকা প্রতি মাসে আপনার ইনকাম হবে। তিন টাইম পড়ালে ২৫০০×৩ = ৭৫০০ টাকা ইনকাম হবে। এবং চার টাইম পড়ালে ২৫০০×৪= ১০০০০ টাকা ইনকাম হবে।

এটি আপনার সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা করে স্টুডেন্টস পিছু নিয়ে ইনকামের ক্ষেত্র। যদি আপনি আরো বেশি ব্যাচ এবং আরো বেশি স্টুডেন্ট নিয়ে, উচু ক্লাসের ছাত্রদের মাথাপিছু আরো বেশি চার্জ করেন। তাহলে ইনকামের পরিমাণটা আপনার আরো বেশি হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *