potato farming – আলু চাষ কিভাবে করবেন, এর জন্য জলবায়ু, মাটি, হচ্ছে ফলনশীল আলুর প্রজাতি, বপন পদ্ধতি, স্যার ও কীটনাশক ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।

Business ideas in Bengali, business ideas at home

আলু একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় একটি সবজি। এমন কোন পরিবার নাই যে তার বাড়িতে আলু পাওয়া যাবে না। আলু যেমন বিভিন্ন তরি-তরকারিতে দেওয়া হয়, তেমনি আলু ভাজা এবং আলুর ভর্তা করেও মানুষ খেয়ে থাকে । তাই যদি কোন পরিবারে চারজন ব্যক্তিও থাকে তাহলে সপ্তাহে কমপক্ষে দুই থেকে তিন কিলো আলুর প্রয়োজন হবেই হবে।

তাছাড়া বর্তমানে আলু বিভিন্ন খাবার দ্রব্য তৈরি করতেও ব্যবহার (potato uses) করা হয়। যেমন আলুর চিপস ( potato chips ) একটি বাচ্চাদের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় মুখরচো খাবার, তবে এই আলুর তৈরি চিপস কিন্তু বাচ্চা ছাড়াও যুবক থেকে বয়স্ক ব্যক্তিরা পর্যন্ত পছন্দ করে থাকে। এবং আলু থেকে তৈরি হয় পাপড়, সিঙ্গারা, আলুর ওয়েজেস (potatoes wedges) ইত্যাদি জিনিস তৈরি করা হয়ে থাকে।

আলু যেমন মানুষের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে তেমনি শরীরের মধ্যেও বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে। কারণ এই আলুর মধ্যে প্রতি ১০০ গ্রামে রয়েছে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট ১৭-১৮ গ্রাম, প্রোটিন ২ গ্রাম, ফ্যাট ০.১০ গ্রাম, ফাইবার ২ গ্রাম, স্টার্চ ১৫-১৬ গ্রাম, সুগার ০.৮৫ গ্রাম, এনার্জি ৭৫ কিলোক্যালরি, ক্যালসিয়াম ১০-১২ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৫-৬ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৪১০-৪২০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-C ২০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-K, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আরও বিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে।

সুতরাং তরি-তরকারি ছাড়াও এই আলু বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য তৈরিতে ব্যবহার হওয়ার কারণে, সারা বছর এই আলোর চাহিদা থেকে থাকে। তাছাড়া বছরে কোন কোন সময় আলুর দাম এত পরিমাণে বাড়ে, যা চাষীদের অনেক টাকা লাভ করিয়ে থাকে। নিম্নে এই চাষের পদ্ধতি এবং অন্যান্য তথ্য সম্পর্কে আলোচনা করা হয় ।

👉 কেমন আবহাওয়ায় চাষ হয়

তাপমাত্রা – এই আলু চাষের জন্য তাপমাত্রা ১৫°C – ২৪°C থাকলে খুবই ভালো হয়। তবে ফসল তোলার সময় তাপমাত্রা একটুকু কম থাকলে ভালো হয়। এটি একটি শীতকালীন ফসল।

বৃষ্টিপাত – এই চাষের সময় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২৫০ থেকে ৪৫০ মিলিমিটার হলে খুবই ভালো । তাহলে সেচের পরিমাণ কম লাগবে। তবে কম বৃষ্টিপাত যুক্ত এলাকাতে জল সেচের মাধ্যমে এই চাষ আরামের সহিত করা যাবে।

👉কি ধরনের মাটিতে চাষ হয়

বেলে, দোআঁশ এবং এপেল মাটিতেও আলু চাষ করা যায়। তবে যেসব মাটিতে জল ওপরে দাঁড়িয়ে থাকে সেসব মাটি আলু চাষের খুব একটা অনুকূল নয়। কারণ বেশিক্ষণ জমিতে জল জমে থাকার কারণে গাছ মরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মাটি হল বেলে এবং দোআঁশ মাটি। তবে ভালো জল নিষ্কাশন যুক্ত ব্যবস্থা থাকলে এটেল মাটিতেও এই চাষ করা যায়। এটেল মাটিতে চাষ করলে পরিশ্রমটা বেলে মাটি এবং দোয়াশ মাটির তুলনায় বেশি হয়। আর লবণাক্তযুক্ত মাটি আলু চাষের জন্য মোটেও নির্ভরযোগ্য নয়।

👉 উচ্চ ফলনশীল আলুর প্রজাতি

ভারতে আলুর প্রজাতি অনেক রয়েছে, যার মধ্যে উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি গুলি হল কুফরি অলঙ্কার, কুফরি বাহার, কুফরি চিপসোনা ১, কুফরি চন্দ্রমুখী, কুফরি পুখরাজ, কুফরি সতলেজ, কুফরি সূর্য, কুফরি জ্যোতি, কুফরি চিপসোনা ১, কুফরি চিপসোনা ৩, কুফরি ফ্রাইসোনা, ইত্যাদি রয়েছে। এই প্রজাতি গুলির বেশির ভাগই জাত অনুসারে পরিপক্ক হতে ৯০ দিন থেকে ১১৫ দিনের মতো লেগে থাকে। এবং কুফরি চিপসোনা ও কুফরি ফ্রাইসোনা প্রজাতিগুলি প্রতি একরে প্রায় ১৫৫ কুইন্টাল থেকে ১৭৫ কুইন্টাল পর্যন্ত ফলন দিয়ে থাকে। এবং অন্যান্য প্রজাতিগুলিও ১১৫ কুইন্টাল থেকে ১৪০ কুইন্টাল পর্যন্ত ফলন দিয়ে থাকে।

বাংলাদেশের কয়েকটি উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি হলো বারি টিপিক্রস-১, বারি টিপিক্রস-২, বারি আলু-১ থেকে শুরু করে বারি আলু-২০ পর্যন্ত সবই উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড আলুর প্রজাতি। যেগুলি বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা কেন্দ্র থেকে তৈরি করা হয়েছে। এই সমস্ত উচ্চ ফলনশীল প্রজাতি গুলি প্রায় ৮৫ থেকে ১০৫ দিনের মধ্যে তোলার জন্য উপযুক্ত হয়ে যায়। এবং প্রতি হেক্টরে প্রায় ১২.৮ টন থেকে ১৪.৫ টন পর্যন্ত ফলন দিয়ে থাকে। তবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে চাষ করলে এই ফলনের পরিমাণ আরো ৪ থেকে ৫ টন বাড়াতে পারে বলে অনুমান করেন বাংলাদেশের কৃষি গবেষণা কেন্দ্রগুলি।

👉 বীজ বপনের সঠিক সময়

আলু একটি রবি মরশুমের ফসল অর্থাৎ শীতকালীন ফসল। আলু লাগানোর সর্ব উৎকৃষ্ট সময় হলো অক্টোবরের একেবারে শেষ সপ্তাহ থেকে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। তবে এর মধ্যে আবার নভেম্বরের ১ তারিখ থেকে নভেম্বরের ১৫ তারিখ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি উৎকৃষ্ট সময় হিসেবে ধরে নেওয়া হয় আলু লাগানোর জন্য। কারণ ওই সময় আলু লাগানোর সর্ব উৎকৃষ্ট তাপমাত্রা বিরাজ করে সেই কারণে।

👉 আলু চাষের পদ্ধতি

🚜 জমি প্রস্তুত

যেই জমিতে আলু লাগানো হবে সেই জমিটিতে প্রথমে জলপাইয়ে নিতে হবে । এরপর জমি যখন একেবারে ভালোভাবে শুকিয়ে যাবে অর্থাৎ জমিতে বাত বা জো চলে আসবে, তখন টাকটার বা পাওয়ার টিলারের সাহায্যে এক থেকে দুইবার নাঙ্গল অর্থাৎ হাল করতে হবে। দেখবেন মাটি যেন বড় বড় চাপ না থাকে, মাটি যেন ভালোভাবে ভেঙে যায়। নাঙ্গলের পূর্বে জমিতে সেচ দেয়ার আগে যদি আপনার বাড়িতে যথেষ্ট পরিমাণে গোবর থাকে তাহলে গোবরগুলিকে ছড়িয়ে দিতে পারেন পুরো জমিতে, তাহলে জমির উর্বরতা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়ে যাবে এবং ফলনও খুব ভালো পরিমাণে হবে।

নাঙ্গল অর্থাৎ হাল করার পর পুরো জমিটিতে মাটিকে সমান করতে হবে। এর জন্য জমিনেতে মই যেইভাবে দেয় সেই পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন। একবারে যদি না হয় তাহলে দুইবার ধরে মই দিতে হবে। এরপর একটি ১ হাত ৪ আঙুলের মতো (১৮-১৯ ইঞ্চি) কঞ্চি কাটবেন, এবং এই কঞ্চির মাপ বরাবর পুরো জমিনটিতে রো কাটতে হবে, এবং এই রো এর গভীরতা ৫ থেকে ৬ আঙুলের মত (৫ ইঞ্চির মত) করতে হবে। কারণ এই রো বরাবরই আপনাকে বীজ আলুগুলিকে বুনতে হবে। সুতরাং এইখানে একটি রো থেকে আরেকটি রয়ের দূরত্ব ১ হাত ৪ আঙুলের মতো (১৮-১৯ ইঞ্চি)।

আর জমির যে বরাবর আলো বীজ লাগানোর জন্য রো করবেন, তার বিপরীত বরাবর বিশেষত পনেরো থেকে কুড়ি ফুট অন্তর অন্তর একটি করে বড় নালা করতে হবে, কারণ এই মেলাগুলো জল সেচ এবং নিষ্কাশনের জন্য ব্যবহার হবে।

👉 আলু বীজ তৈরি ও পরিমাণ

আপনার বাড়িতে যদি বীজ তৈরির জন্য আলো থেকে থাকে তাহলে সেই আলুকেই বীজ তৈরির জন্য ব্যবহার করতে পারেন। না হলে আপনাকে বাজার থেকে উচ্চ ফলনশীল হাইব্রিড আলু কিনে আনতে হবে বীজ তৈরি করার জন্য।

এরপর বায়ু চলাচল যুক্ত জায়গায় ১০ থেকে ১৫ দিন রেখে দিতে হবে, বিশেষত যতক্ষণ না পর্যন্ত আলুগুলো থেকে আকুর বা অঙ্কুরোদগম হচ্ছে । যাতে ভালো অঙ্কুরোদগম হয় তার জন্য আপনি ৯-১০ লিটার জলে ১ গ্রাম জীবেরেলিক অ্যাসিড গুলে অথবা মারকিউরিক ক্লোরাইড ৪ গ্রাম নিয়ে ৮ লিটার জলেগুলে আলু গুলিকে ১ থেকে ১.৫ ঘন্টার মত ডুবিয়ে রাখতে পারেন।

এরপর অঙ্কুরোদগম আলু গুলোকে কেটে নিতে হবে। মনে রাখবেন যেই যেই অংশে অঙ্কুরোদগম হয়েছে সেই সেই অংশগুলোকে কাটতে হবে। তবে মনে রাখবেন ছোট আলু হলে দু পিস করবেন এবং যদি বড় আলো হয় মোটামুটি তিন থেকে চার পিস করবেন।

আর মনে রাখবেন প্রতি কুইন্টালে ৮ থেকে ১১ কুইন্টাল বীজ আলুর প্রয়োজন হতে পারে। তবে আলোর সাইজ যদি ছোট হয় তাহলে পরিমাণ কম লাগবে এবং যদি আলুর সাইজ বড় হয় তাহলে পরিমাণ বেশি লাগবে।

👨‍🌾বীজ বপন পদ্ধতি

প্রথম – যেই রো গুলি আপনি তৈরি করেছেন সেই রো বরাবর লাইন দিয়ে অঙ্কুরোদগম কাটা আলুর অংশ গুলোকে ৫-৫.৫ ইঞ্চি অর্থাৎ ৭ থেকে ৮ আঙ্গুল অন্তর অন্তর ফেলে দিয়ে চলে যাবেন। তবে মনে রাখবেন কাঁটা, আলোর অঙ্কুরোদগম অংশগুলি যেন উপরের দিকে থাকে এবং কাটা অংশগুলি যেন নিচের দিকে থাকে। আর রাখার সময় হালকা যদি বাঁকিয়ে রাখেন অর্থাৎ ৩৫ থেকে ৪০ ডিগ্রি এঙ্গেলে তাহলে আলুর ফলন ভালো হয়।

দ্বিতীয় – এখনো পর্যন্ত রো এর দূরত্ব ১ হাত ৪ আঙুলের মতো (১৮-১৯ ইঞ্চি) রয়েছে। এই রো এর মাঝ বরাবর নাঙ্গল রেখে টানতে হবে। যাতে করে মিডিলের দুই পাশে যে রো রয়েছে এবং ওই রো গুলিতে যে অঙ্কুরোদগম আলু বীজগুলো কে লাইন বরাবর রাখা হয়েছে, সেই বীজগুলো যাতে মাটি ঝাঁকা পড়ে।

👉 সার প্রয়োগ

জমি তৈরি করার সময় অর্থাৎ জমিনেতে নাঙ্গল দেওয়ার পূর্বে আপনার বাড়িতে যদি গোবর থেকে থাকে, তাহলে বিঘা পিছু এক থেকে দেড় ট্রাক্টর গোবর দিতে পারেন। অথবা যদি গোবর না থাকে তাহলে পোল্ট্রির পায়খানা বিঘা পিছু আপনাকে ৫ থেকে ৬ বস্তা দিতে হবে ( এগুলিকে কিনে এক বছরের মত রোদ এবং জল লাগে এমন জায়গায় মজুদ করে রেখে পচিয়ে নিতে হবে) এতে করে নাঙ্গল দেয়ার পর আপনাকে আর তেমন রাসায়ানিক সার প্রয়োগ করার প্রয়োজন হবে না, যদিও করেন তা চারভাগের একভাগ করলেই যথেষ্ট হবে।

আর যদি আপনি গোবর বাপ পোল্ট্রি সার না প্রয়োগ করেন তাহলে জমিন নাঙ্গল করার পর, সমতল করে অর্থাৎ মই দিয়ে আপনাকে বিঘা পিছু সিঙ্গেল সুপার ফসফেট ৭৫ থেকে ৮৫ কেজি দিতে হয়।

এরপরে প্রথম জলসেচ এর পর N.P.K বা ১০:২৬:২৬ প্রতি বিঘা কিছু ৫০ কেজি এবং ইউরিয়া কুড়ি কেজি প্রয়োগ করতে হবে। অথবা ২ কেজি করে ইউরিয়া এবং ২ কেজি করে গ্রোমর মিক্স করে প্রতি কাঠা পিছু ছড়াতে পারেন।

👉 জলসেচ

জমির মাটির প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে জমিতে জল সেচের পরিমাণ। বেশি সময় ধরে জল ধরে রাখতে পারে এই ধরনের মাটি বিশেষত এটেল মাটিতে চারটা জল সেচ হলেই যথেষ্ট। আবার বেলে এবং দোআঁশ মাটিতে জল সেচের পরিমাণ বেশি লাগে, এই ধরনের মাটিতে ৬ থেকে ৭টি জল সেচের প্রয়োজন হয়ে থাকে।

জমিতে বীজ বপনের পর জো বা বাতের ওপরে প্রথম জল সেচের প্রয়োজনীয়তা নির্ভর করে। বীজ বপন করার পর জমিতে যদি বেশি দিন পর্যন্ত জো বা বাতের থাকে, প্রথম জলসেচ দেরীতে দিতে হবে। তবে প্রথম সেচ ১২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে দেওয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে।

দ্বিতীয় সেচ বিশেষত ৩১ থেকে ৩৪ দিনের মধ্যে, তৃতীয় সেচ ৫০ থেকে ৫৫ দিনের মধ্যে এবং চতুর্থ সেচ ৬৫ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে । তবে পূর্বেই বলা হয়েছে প্রয়োজন অনুযায়ী ১৫ থেকে ২০ দিনের মাথায় মাথায় সেচ দেওয়া যেতে পারে। তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে জমি নিতে যেন বেশি সময় (১২ ঘন্টার) ধরে চল জমে না থাকে। আর ফসল তোলার ১২ থেকে ১৫ দিন আগে জমিতে কোন জল খাওয়ানো চলবে না।

👉 আগাছা পরিষ্কার ও মাটি খাওয়ানো

প্রথম জল সেচের পর অর্থাৎ বীজ বপণের ২১ থেকে ২৪ দিনের মাথায়। গাছের গোড়ায় পুনরায় মাটি খাওয়াতে হয়। এতে করে গাছের গোড়ায় যেমন থাকা আগাছা গুলি মাটিচাপা পরে তেমনি যেখান থেকে কোদাল দিয়ে মাটি তোলা হচ্ছে সেখানকার আগাছাও পরিষ্কার হয়ে যায়। তবে যদি তবুও দু-একটা বড় বড় আগাছা থেকে থাকে সেগুলিকে কোদালের সাহায্যে বা হাতের সাহায্যে তুলে ফেলতে পারেন।

👉 আলু চাষে পোকামাকড় ও রোগের চিকিৎসা

মাটির নিচে আলু এবং উপরের কান্ড ও পাতায় নানান ধরনের পোকামাকড়ের উপদ্রব হয়। যেমন কাটুই পোকা, চাঁপা পোকা, বিভিন্ন শুঁয়োপোকা, লালবাগ, লেদা পোকা ইত্যাদি। এগুলি মাটির নিচে আলুতে দাগ, আলুতে ছিদ্র, উপরের পাতাগুলি কেউ খেয়ে ফেলে। এই সমস্ত পোকামাকড় গুলিকে মারার জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে।

এছাড়া গাছে বিভিন্ন ধরনের রোগ লক্ষ্য করা যায়। যেমন- ব্লাইট রোগে আলুর উপর স্তর ক্ষত সৃষ্টি, আলুতে কালো দাগে আলুর চোখে কালো ও বাদামি স্পট পরে,ডাউনি মিলডিউ রোগে পাতার ডগা এবং নিচের অংশে সাদা পাউডারের মত স্পট পরে , এই সমস্ত রোগে আলু এবং গাছের পাতা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে ফলনের অনেকটাই হ্রাস ঘটে। তাই হালকা হালকা রোগ লাগার মধ্যেই এর চিকিৎসা করতে হবে। ঠিক নাশক ঔষধ আনে রোগের নাম বললেই কীটনাশক দিয়ে দিবে।

👉 ফসল তোলা

পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে বিভিন্ন জাত অনুসারে ফসল তোলার জন্য উপযুক্ত সময় লাগে ৮৫ থেকে ১১৫ দিন পর্যন্ত। বা কিছু কিছু ক্ষেত্রে আরও কয়েকদিন বেশি। তবে যাই হোক অবশ্যই মনে রাখবেন যখন কাণ্ড গুলি নিচের দিকে এলে পড়বে এবং গাছের পাতাগুলি হলুদ ভাবের অংশ নেবে। তখনই আপনার আলো গুলি তোলার জন্য উপযুক্ত হয়ে যাবে।

এরপর গাছগুলোকে ধরে ধরে টেনে আলুগুলোকে বার করতে হবে। এইভাবে টানতে গিয়ে অনেক সময় কিছু কিছু আলো মাটির মধ্যে থেকে যায়। সেগুলিকে সংগ্রহ করার জন্য পুরো জমিতে গাছ টেনে আলু তুলে নেয়ার পর একবার নাঙোল করে নিতে হবে, তাহলে যে সমস্ত আলো গুলি মাটিতে ছিঁড়ে রয়ে যাবে সেগুলি কেউ এই নাঙ্গলের মাধ্যমে সংগ্রহ করা যাবে।

তবে অবশ্যই মনে রাখবেন আলু তোলার কাজ হল সকালে। কারণ এই সময় তাপমাত্রা কম থাকে। কারণ আলু তোলার উপযুক্ত তাপমাত্রা কম থাকা প্রয়োজন। বিশেষত বেশি তাপমাত্রায় বা রৌদ্র থাকা অবস্থায় যদি আলু তোলা হয়, তাহলে আলো গুলিতে রোদ লাগবে, যেগুলি স্টোর করে বেশিদিন রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে অর্থাৎ পচন লাগতে পারে খুব জলদি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *